Saturday, 18 October 2025

নাকাশীপাড়া ও পলাশীপাড়া বিধানসভায় ২১ এর তুলনায় ২৬শে ভালো ফল হতে যাচ্ছে বিজেপির।

দীপশিখা ব্যানার্জি, দিন প্রতিদিন নিউস, নদীয়া - নাকাশীপাড়া ও পলাশীপাড়া বিধানসভায় ২০২১ এর তুলনায়  ২০২৬-এ বিজেপির ভালো ফল হতে যাচ্ছে।
 তার কারণ, যদি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হয়, SIR সঠিকভাবে কার্যকর হয় এই রাজ্যে, আর বিজেপি কর্মীরা যদি সঠিকভাবে ভোট গণনা কেন্দ্রে পাহারা দিয়ে নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে এই বিধানসভার ক্ষেত্রে বিজেপির অনেকটাই ভালো ফল হতে পারে এমনকি নাকাশীপাড়া বিধানসভা জয়ের কাছাকাছি চলে আসতে পারে।
গত বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগেই এই দুই বিধানসভায় ভোট গননা কেন্দ্রে বিজেপির অনেক কর্মী শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন না। নাকাশীপাড়া বিধানসভায় ৮২ বুথের গগনা কেন্দ্রে  ও পলাশীপাড়া বিধানসভায় ৮৯ টি বুথের গননা কেন্দ্রে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিজেপি কর্মীদের দেখা যায়নি। 
ভোটের ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কর্মীদের উপস্থিতি ও প্রস্তুতি থাকতে হবে ভোট গণনা কেন্দ্রর মধ্যে। তবেই বিজেপি তৃণমূলকে সরাসরি টক্কর দিতে পারবে এই দুই বিধানসভায়। 

 নাকাশীপাড়া বিধানসভার বিগত বিধানসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় - প্রায় ৮০টি উপর বুথে  বিজেপি মাত্র ১০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছে। এই কয়টি বুথেই বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত করেছে তৃণমূল। আর এই বুথগুলির গণনা কেন্দ্রে বিজেপি কর্মীদের শেষ পর্যন্ত দেখা যায়নি। কিন্তু বিজেপি যখন দেখল তাদের জয় হচ্ছে না পরাজয় নিশ্চিত, আস্তে আস্তে করে অনেক গণনা কেন্দ্র থেকে ধীরে ধীরে কর্মীরা বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকে গত বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিনে। 
 সব থেকে বড় কথা গণনা কেন্দ্রে যে সমস্ত কর্মীদেরকে পাঠানো হয়েছিল তার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ সিপিএম থেকে আসা লোকজন যাদেরকে সবে বিজেপির দায়িত্ব দিয়েছিল। গণনা কেন্দ্রে পুরনো কর্মীদের পাঠানো উচিত যারা বিজেপি টাকে মন থেকে ভালোবাসে যারা দীর্ঘদিন ধরে বিজেপিটা করছে এমন কর্মীদেরকেই গণনা কেন্দ্রের মধ্যে পাঠানো উচিত। এটা বিজেপি করতে পারেনি। এটাও একটা বড় কারণ পরাজয়ের। 
নাকাশিপাড়া বিধানসভা প্রায় ২ লক্ষের ৬০ হাজারের উপরে ভোটার। যার মধ্যে ৪৭% মুসলিম ভোটার। বাকি ৫৩% হিন্দু ভোটার। আরো আশ্চর্যের বিষয় এই হিন্দু ভোটারের ৭০% পার্সেন্ট তপশিলি উদ্বাস্তু মতুয়া ভোটার। যার বেশিরভাগটাই তৃণমূলের ঝুলি থেকে বিজেপির ঝুলিতে যায় এই ভোটের কারণেই তৃণমূল এতদিন জিতে আসছে এখানে। তবে মুসলিম ভোটারে এবার ভাঙ্গন ধরা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। 

ঠিক এইরূপ পলাশীপাড়া বিধানসভায় ৯০ টি কাছাকাছি বুথে গণনা কেন্দ্রে শেষ পর্যন্ত বিজেপি
 কর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। 
 গত লোকসভা ভোটের সময় এই বিধানসভার গননা কেন্দ্রের মধ্যে তৃতীয় রাউন্ড গণনার পরে ধীরে ধীরে কর্মীরা কমতে থাকে। 
 এই দুই বিধানসভায় বিজেপির একটা অংশে বিশ্বাসঘাতকতার কারণে কৃষ্ণনগর লোকসভা হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির।  
 তবে এই মুহূর্তে এই দুটো বিধানসভায় বিজেপির কার্যক্রম ভালো হওয়ায় মানুষের মনে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে হয়তো বিজেপি এইবার বিধানসভায় ভালো ফল করবে। মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে পলাশীপাড়া তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হলেও ,  তৃণমূলের দুর্নীতির কারনে,বিশেষ করে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি  এই বিধানসভায় তৃণমূলকে ব্যাক ফুটে ঠেলে দিয়েছে। 
 এই অ্যাডভান্টেজ বিজেপি পেতে পারে এবার বিধানসভায় এখানে। 
 এখনো পর্যন্ত এই দুই বিধানসভায় বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা নাকাশিপাড়া ৪৬% ও পলাশীপাড়ায়  ৪২% এর কাছাকাছি। তবে সঠিক প্রার্থী নির্বাচন ও নতুন পুরাতন সমস্ত কার্যকর তাকে ভোটের ময়দানে বিজেপি নামাতে পারলে, এবং রাজ্যে সঠিকভাবে SIR আর হলে জয়ের দোর গড়ায় পৌঁছে যাবে বিজেপি।
 যদিও কৃষ্ণনগর লোকসভার মধ্যে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে এই দুটো বিধানসভা পরিচিত। 
 শাসক এবং বিরোধী দলকে  এই দুই বিধানসভায় নিখুঁতভাবে প্রার্থী নির্বাচন করতে হবে। শাসক দল তৃণমূল  তারাও প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে এই দুই বিধানসভায় সমস্যায় পড়তে চলেছে। 
 নাকাশীপাড়া বিধানসভায় এবার তৃণমূল বিধায়ক কল্লোল খানকে পুনরায় টিকিট দেবে কিনা সেটাই কোটি টাকার প্রশ্ন। যদি বয়সজনিত কারণে তৃণমূল তাকে টিকিট না দেয়, সে ক্ষেত্রে কনিষ্ক চক্রবর্তীর নাম প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। যদি সিপিএম কংগ্রেসের জোট হয়  সেক্ষেত্রে একজন মহিলা প্রার্থীর নাম উঠে আসছে এখানে প্রার্থী হওয়ার জন্য। 
 বিজেপি প্রার্থী হওয়ার জন্য অনেকের নামই শোনা যাচ্ছে। তবে সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে নামটি আছে তিনি হলেন পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা  শিক্ষক অনুপ কুমার মন্ডল। তিনি এই মুহূর্তে নাকাশিপাড়া বিধানসভায় একদম হট সিটে বসে আছেন। এছাড়াও প্রার্থীর দৌড়ে রয়েছেন অনন্ত সরকার, দীনেশ বিশ্বাস, গতবারের প্রার্থী শান্তনুদেব  সহ অনেকের নাম। তাই বিজেপি দলকে জনমত সমীক্ষা ও কর্মীদের মতামতের প্রাধান্য দিলেই বিজেপি এখানে জয়লাভ করতে পারে। 
 অপরদিকে পলাশীপাড়া বিধানসভায় তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হলেও  মানিকবাবুর এসএসসি দুর্নীতি  মানিক বাবুসহ  তৃণমূলকে এই বিধানসভায় ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। এখন প্রশ্ন তৃণমূল এখানে কাকে প্রার্থী করে। হয়তো মানিক বাবুর পুত্রের নাম শোনা যাচ্ছে। কিন্তু তিনিও দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে ফেলেছেন। এখানে তৃণমূল প্রার্থী ঠিক করতে হিমশিম খেয়ে যাবে। শোনা যাচ্ছে অভিষেক ঘনিষ্ঠ কোন যুবনেতার নাম এখানে প্রার্থীর দৌড়ে আছে। 
 বিজেপি প্রার্থীর দৌড়ে  সবার প্রথমেই থাকছেন সঙ্গীতা ঘোষের নাম। তিনি জেলা রাজনীতি করেন। আগে তিনি মহিলা মোর্চা করতেন। তাকে বিজেপির বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রমে দেখা যাচ্ছে বিধানসভার জুড়ে। 
 তবে অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে ও তাকে দেখা যাচ্ছে প্রচুরভাবে। এছাড়াও বিজেপি প্রার্থীর দৌড়ে রয়েছেন গতবারের প্রার্থী বিভাস চন্দ্র মন্ডল।
 তবে এই বিধানসভায় বিজেপি কর্মীদের  মতামত এখান থেকে কোন মহিলাকে প্রার্থী করুক এবার দল। 
 এখন দেখা যাক বিজেপি দল কি করে। 
যদিও ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে এখান থেকে তৃণমূল ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল এবং বিজেপি পেয়েছিল ২৯ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করা যাবে না। 
 সারা ভারতে এস আই আর(SIR )লাগু হয়েছে।
 এই বিধানসভায় SIR এর মাধ্যমে প্রচুর ভোটার বাদ যেতে পারে। কমপক্ষে ১৫-২০ হাজার   ভোটার তালিকা থেকে বাদ যা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া মানিক বাবুর দুর্নীতি সমগ্র পৃথিবীর লোক জেনে গেছে। সেই কারণে এই বিধানসভায় তৃণমূল বিজেপির পার্থক্য খুব বেশি নেই। যদি বিজেপি ঠিকঠাক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারলে তাহলে জোরদার লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা আছে এখানে। 
 

Saturday, 11 October 2025

কৃষ্ণনগর উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভায় বিজেপি খুব সহজে জয় পেতে পারে এই কাজগুলো করলে

দীপশিখা ব্যানার্জি, দিন প্রতিদিন নিউজ,  কৃষ্ণনগর- ২৪ এর লোকসভা ভোটের নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় কৃষ্ণনগর উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভা ২০২৬ শে বিজেপি খুব সহজেই জয়লাভ করতে পারে এই কাজগুলি করলে।
 কিন্তু এই কাজগুলো কি বিজেপি করতে পারবে?  এটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পুরো কৃষ্ণনগর জুড়ে। 
 কৃষ্ণনগর লোকসভা ভোটে যে সমস্ত ভুল বিজেপি করেছে সেই ভুল পুনরায় করলে জয় অধরাও থেকে যেতে পারে।
 এখন প্রশ্ন আসতে পারে সেই ভুলগুলি কি কি ? প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যে ভুলগুলি কৃষ্ণনগর লোকসভা ভোটের সময় বিজেপির নেতৃত্বের দ্বারা হয়েছিল তাকে বিশ্লেষণ করার সময় এটা নয়। কিছু পরোক্ষ ভুল ছিল যেগুলি ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে করেছিল বিজেপি।

 প্রত্যক্ষভাবে যেটা করা উচিত  - ১) স্থানীয় কাউকে প্রার্থী  করা উচিত। ২)কম করে ৮০ শতাংশ বুথে কর্মী বসানো উচিত ভোটের দিনে। 
৩) ইনডোর প্রোগ্রাম বাদ দিয়ে আউটডোর প্রোগ্রাম করা উচিত বেশি। বিশেষ করে থানা ঘেরাও এবং ভিডিও অফিস ঘেরাও, পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চল ও পৌরসভায় ডেপুটেশন দেওয়া। এই কর্মসূচি গুলো লাগাতার দুমাস ধরে নেওয়া উচিত। যে সমস্ত কর্মীরা ইনডোর প্রোগ্রামে থাকে অথচ আউটডোর প্রোগ্রামে তাদের উপস্থিতি দেখা যায় না তাদের পদে রাখা কতটা যুক্তিসঙ্গ এবং তাদেরকে দিয়ে সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি হবে এটা কোটি টাকার প্রশ্ন। 
৪) যে সমস্ত মন্ডল সভাপতি করা হয়েছে তার ৯০% সিপিএম থেকে আসার লোকজন।  এরা কখনোই চাইবে না যে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসুক। তাইতো যদি এদের কে না সরানো যায়। অবিলম্বে এদের মাথার উপর একজন করে পুরনো কার্যকর থেকে জ্বর বাড়ীর দায়িত্ব দেওয়া উচিত প্রত্যেকটা মন বলে মণ্ডলে। 
৫) বিধানসভা ইলেকশন অবজারভার  বা কনভেনার গুলি কোনমতেই পুরনো কার্যকর্তা ছাড়া করা উচিত নয়। 
৬) যে সমস্ত বুথ সভাপতি গুন করা হয়েছে তাদেরকে  গ্রাম চলে অভিযানের মাধ্যমে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। তারা সেই গ্রামে সক্রিয়ভাবে বিজেপির কাজকর্ম করছে কিনা দেখে নেওয়া উচিত। 
 যারা বেশিরভাগ বিজেপির সক্রিয় সদস্যতা গ্রহণ করেছে তাদেরকে পদে না বসিয়ে  বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। 
৭) এইভাবে নির্বাচনে গেলে  এবারও জয় অধারা থেকে যেতে পারে। 
৮) যে সমস্ত কার্যকর্তা টাকার বিনিময়ে পথ বিক্রি করে বা নিজেরা পদে যাওয়ার চেষ্টা করে টাকার বিনিময়ে এদেরকে চিহ্নিতকরণ করন করা উচিত।
 এ সমস্ত জিনিস দেখার লোকের অভাব।
৯ ) সিপিএমের দাগি ও মানুষের চোখে খারাপ হয়ে যাওয়া কার্যকর্তাগুলোকে যেভাবে পদ দেওয়া হয়েছে ২০১৯ সালের পর থেকে তখন থেকেই দলের ধ্বস নামতে শুরু করেছে। এটাকে প্রত্যক্ষভাবে শোধরানোর প্রয়োজন।
 পরোক্ষ ভাবে যেটা করা উচিত -
১) কর্মীদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব তৈরি হয়েছে দূর করতে হবে সেই সমস্যা গুলিকে।
২) কর্মীরা অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এখনো কেন্দ্রের সাথে রাজ্যের একটা সেটিং আছে  এটাকে দূর করতে হবে। 
৩) সাংগঠনিক বিষয়ে জাত পাতের  একটা বিষয় প্রত্যক্ষভাবে পরোক্ষভাবে লক্ষ্য করা যায় এটাও দূর করতে হবে। 
৪) রাজ্য স্তর থেকে জেলা স্তর, মন্ডল স্তর পর্যন্ত একটা জিনিস পরিষ্কারভাবে স্পষ্ট আমি অমুক নেতার সহযোগী আমি অমুক নেতার অনুগামী এটা বন্ধ না হলে রাজ্য বিজেপি কখনো সংঘটিত হতে পারবেনা। 
৫) বিশেষ প্রয়োজন না হলে , কোন বিধানসভা ক্ষেত্রেই বাইরে থেকে প্রার্থী দেয়া উচিত নয়। 

 ৬)যারা সারা বছর সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকে এমন কাউকেই প্রার্থী করা উচিত দলের। 
৭) জন প্রতিনিধিরা বিশেষ করে বিধায়ক এবং এমপিরা যদি সংগঠনে হস্তক্ষেপ করে তাহলে সে সংগঠন কোনদিন শ্রী বৃদ্ধি হতে পারে না। 
 এই সমস্ত বিষয়গুলোকে পরোক্ষভাবে মোকাবেলা করতে হবে রাজ্য বিজেপিকে।
 এই যে সমস্যা এগুলি শুধু কৃষ্ণনগর  লোকসভার মধ্যে আছে এটা কিন্তু নয়, প্রায় সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই একই সমস্যার সম্মুখীন রাজ্যে বিজেপি। এগুলো না সমাধান করতে পেরেছে ২০২১ সালে, হয়তো ২৬ সালের ভোটের আগে এটাও সমাধান করতে পরিপূর্ণভাবে পারবেনা বিজেপি। 
 তবে কৃষ্ণনগর উত্তর দক্ষিণ বিধানসভায় বিজেপির জয়ের প্রচুর সম্ভাবনা আছে। 
 কিন্তু এই বিধানসভায় ৯০ শতাংশ মানুষের দাবি এখানে স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করা হোক। 

 আমাদের সমীক্ষা অনুযায়ী  কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় ২০২১ শে মুকুল রায় কে প্রার্থী করে এখানকার কর্মীরা প্রচণ্ডভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছিল কিন্তু সাংগঠনিক অবস্থা  ভালো থাকার কারনে মুকুল রায় জিতে যায়। তাছাড়া ২১ সালের তৃণমূলের বিরুদ্ধে  হাওয়া ছিলো। যদিও ২৬ সালেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাওয়া থাকবে। সেই হাওয়াকে নিজেদের অনুকূলে আনতে গেলে বিজেপিকে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে উপরে দেওয়া উক্ত কাজগুলো করতে হবে। 

জনমত সমীক্ষায়, ৮০-৯০ শতাংশ মানুষ স্থানীয় মানুষকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছে.। 
 কিন্তু রাজ্য বিজেপির যদি কোন সেলিব্রেটি বা বহিরাগত কাউকে প্রার্থী করে তবুও দল এখানে ভালো ফল করতে পারবে না। সে যতই বিজেপি এগিয়ে থাকুক না কেন।
 ২০২১এ রাজ্য বিজেপি বহিরাগত মুকুল রায় কে এখান থেকে প্রার্থী করে প্রচুর ভোটে জয়লাভ করলেও এই বিধানসভার মানুষের কোন উপকারে আসেনি বলে এখানকার মানুষের বা সাধারণ কর্মীদের অভিযোগ।
 তাইতো স্থানীয় মানুষের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে তারা এখন স্থানীয় কাউকে প্রার্থী হিসেবে বা MLA হিসেবে দেখতে চাইছেন।
 এই বিধানসভার রাজনৈতিক সমীকরণ কিছুটা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বিজেপি এখানে তৃণমূলের থেকে কয়েক গুণ এগিয়ে। কিন্তু সাংগঠনিক  ভাবে  এতটা শক্তিশালী নয়।
এখানে বিজেপি খুব সহজে জয়ের অন্যতম প্রধান কারণ  এই বিধানসভায় সংখ্যালঘু ভোটার মাত্র ৭% শতাংশ কাছাকাছি। আর মতুয়া উদ্বাস্তু বা তপশিলি  ভোটার ৩৪%। এই কারণেই এই বিধানসভাটি বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিণত হয়েছে। 
 কৃষ্ণনগর লোকসভার প্রাণকেন্দ্র কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা। এখানেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বাড়ি। গত লোকসভা ভোটে এই রাজ বাড়ীর বৌমা  বা রানীমা অমৃতা রায়  লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তৃণমূলের মহুয়া মিত্রের বিরুদ্ধে। তিনি হেরে গেলেও  রানী মা অমৃতা রায ভোট পেয়েছিলেন ৪০.১৩% । তার প্রাপ্ত ভোটার সংখ্যা ছিল  ৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৪ টি ভোট। 
 কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় ২০২৬ শে প্রার্থীর দৌড়ে প্রবল দাবিদার রানী মা, যদিও তিনি প্রার্থী হতে রাজি আছেন কিনা সেটা এখনো জানা যায়নি।তবে কর্মীদের মুখ থেকে শোনা যায় তিনি যেভাবে এই বিধানসভার বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগ বৃদ্ধি করে চলেছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় কর্মীদের নিয়ে SIR ও CAA নিয়ে আলোচনা শিবিরের অংশগ্রহণ করছেন তার থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়  তিনি প্রার্থীর দৌড়ে অবশ্যই আছেন। এই বিধানসভার স্থানীয় মানুষও তাকে প্রাপ্তি হিসেবে দেখতে চাইছেন। বিজেপির বর্ষিয়ান কর্মীদের মুখ থেকে একাধিকবার শোনা যাচ্ছে তিনি এবার হয়তো কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় ভোটে দাঁড়াতে পারেন। যদিও রানী মা অমৃতা রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি তিনি প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন কিনা এ বিষয়ে জানার জন্য। কিন্তু জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে  এখানকার ৬৭% মানুষ তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছেন।
 অপরদিকে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায়ও বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা আছে,। যদি বিজেপি উক্ত কাজগুলি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে করতে পারে। তবে এখানেও স্থানীয়ভাবে কাউকে প্রার্থী করার প্রয়োজন। সূত্রের খবর কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা  রানীমার একমাত্র পুত্র রাজকুমার মনিশ রায়কে প্রার্থী করার জন্য আলোচনা শুরু করেছে দলের একটা অংশ কিন্তু রাজবাড়ি সূত্রে জানা যায়, রাজকুমার মনীশ রায় পত্রপাট না করে দিয়েছেন । তিনি কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা থেকে ভোটে দাঁড়াতে চান না। 
 তবে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় রাণীমা দাঁড়াতে চান কিনা সেটা এখনো  সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এই বিধানসভার ভোট স্বীকার কর্মীরা চাইছেন তিনি এখান থেকে প্রার্থী হন।
 



নাকাশীপাড়া ও পলাশীপাড়া বিধানসভায় ২১ এর তুলনায় ২৬শে ভালো ফল হতে যাচ্ছে বিজেপির।

দীপশিখা ব্যানার্জি, দিন প্রতিদিন নিউস, নদীয়া - নাকাশীপাড়া ও পলাশীপাড়া বিধানসভায় ২০২১ এর তুলনায়  ২০২৬-এ বিজেপির ভালো ফল হতে যাচ্ছে। ...